July 31, 2025, 4:55 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনে ১ জুন থেকে তিন মাসের প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বন বিভাগ, যা মূলত বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে। সুন্দরবনের পশ্চিম বন বিভাগ জানিয়েছে, এ নিষেধাজ্ঞা ৩১ আগস্ট পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
এই সময়কালে বনবাসী, পর্যটক এবং অন্যান্য কোনো ব্যক্তি সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারবে না।
বন বিভাগ জানিয়েছে, প্রতিবছর নির্দিষ্ট একটি সময়ে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়, যাতে জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ রক্ষায় কোনো বিঘ্ন না ঘটে। তারা এ নিষেধাজ্ঞাকে বনকে ‘বিশ্রাম’ দেওয়ার একটি উপায় হিসেবে বর্ণনা করেছে, যাতে বনাঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও প্রতিবেশ সংরক্ষিত থাকে। পূর্বে এই নিষেধাজ্ঞা দুই মাসের জন্য জারি করা হতো, তবে ২০২১ সালে মন্ত্রিপরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তা বাড়িয়ে তিন মাস করা হয়।
সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, জুন, জুলাই ও আগস্ট—এই তিন মাস সুন্দরবনে সব ধরনের বনসম্পদ আহরণ ও ইকোট্যুরিজম কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে। তিনি জানান, খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এ জেড এম হাসানুর রহমানের স্বাক্ষরিত নির্দেশনা তারা ২৩ মে হাতে পান। সেই অনুযায়ী ২৬ মে থেকে সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতিপত্র (পাস) প্রদান বন্ধ করে দেয় বন বিভাগ।
তিনি আরও বলেন, যাঁরা পূর্বে অনুমতি নিয়ে এখনও বনাঞ্চলে অবস্থান করছেন, তাঁদের ৩১ মে’র মধ্যে বন এলাকা ত্যাগ করে লোকালয়ে ফিরে আসতে হবে।
৫০ হাজারেরও বেশি বননির্ভর মানুষের দুর্ভোগ/
স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে সুন্দরবনের পশ্চিমাঞ্চলের সাতক্ষীরা রেঞ্জে ৫০ হাজারেরও বেশি বননির্ভর মানুষ ও ট্রলারচালক কাজ হারাবেন। প্রতি বছর এই সময়ে শুধুমাত্র জেলেদের সরকারিভাবে ৮০ কেজি চাল সহায়তা হিসেবে প্রদান করা হয়। ফলে অন্যান্য বননির্ভর পরিবার, যারা মাছ ধরা ছাড়া অন্য কাজে যুক্ত, তারা চরম দুর্ভোগে পড়েন। এবার তারা খাদ্য সহায়তার দাবি জানিয়েছেন।
সাতক্ষীরা রেঞ্জের ট্রলার সমিতির সাবেক সভাপতি আবদুল হালিম জানান, এলাকার বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত, ফলে অনেকেই মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হন। তিনি সুন্দরবনে কর্মরত জেলে, বাওয়ালী, ট্রলারচালক, চালকের সহকারী ও পর্যটক গাইডদের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা চলাকালে খাদ্য সহায়তা প্রদানের আহ্বান জানান।
Leave a Reply